সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অপরাহ্নে অপরিচিত

অপরাহ্নে অপরিচিত
প্রথম পর্ব
একেই বলে যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। বৈশাখ মাসে ভর দুপুরে রাস্তায় বেরোনো মানে পাঠক পাঠিকা গন নিশ্চই বুঝতে পারবেন আমার অবস্থা। তারপর আবার মমতা পিসির দেওয়া সবুজ সাথী সাইকেলের চেন খুলে যায় তাহলে হয়েই গেল। এবার বলি আমার এই ভর দুপুরে রাস্তায় বেরোনোর কারণ –
আমি ওই যাকে বলে মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে তারপর আবার একা। তাহলে বুঝুন আমার উপর চাপ কিরকম! বাপের অদম্য ইচ্ছার জোর আর আমার জেদ এই নিয়ে ভালো মার্কস নিয়ে 12th পাস করি। কিন্তু করলে কি হবে এর পরেই ত আসল খেলা শুরু। শিক্ষক sorry! শিক্ষিকা হবার ইচ্ছায় কলেজে ভর্তি হলাম। এরপর শুধু টাকার খেল! বাবা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে সামলাতে! তাই আমাকে শুরু করতে হলো প্রাইভেট টিউশন পড়ানো। আর তার জন্যই এত দুপুরে বেরোনো। শীতকালে ব্যাচটা শুরু করেছিলাম তখন বুঝিনি গরমে এত ভুগতে হবে! যায় হোক অনেক হলো বোকা এবার চেন পরানোই মনোনিবেশ করা যাক।……..
দুম.…..! তারপর ঝনঝন শব্ধ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলাম আমার সাইকেল উল্টে পড়ে আছে রাস্তার পাশে ড্রেনের ভিতর। আর তার সাথে আর একটি নতুন জিনিস লক্ষ্য করলাম। দেখলাম একটা স্কুটির সামনের চাকা ড্রেনে ঢুকে গেছে আর তার চালক একজন মহিলা বা বলা চলে এক যুবতী প্রাণপণ চেষ্টা করছে স্কুটিটা টেনে বার করার। ঘটনাক্রম বুঝে উঠতে মাথায় মা কালীর রাগ চেপে বসলো। আমি এগিয়ে গিয়ে মেয়েটাকে স্কুটি থেকে নামিয়ে ঠাটিয়ে চড়, মেয়েটার ফর্সা গাল লাল হয়ে আমার আঙ্গুলে দাপটে। বুঝলাম বেশ জোরেই বসেছে চড়টা। মেয়েটা চোখ ছলছল করে গালে হাত দিয়ে চেপে রইল। তারপর কিছু না বলে নিজের স্কুটি তোলাই মগ্ন হয়ে গেলো। আমি মনে মনে বললাম, “কি আজব মেয়ে রে বাবা! কোনো রিয়াকশন পেলাম না”। আমিও আমার সাইকেল তোলাই মগ্ন হলাম। ধাক্কার আওয়াজ শুনে বোধ হয় পাড়ার কিছু ছেলে ছুটে এলো। কেউ এগিয়ে গেলো ওর দিকে আর বাকিরা এগিয়ে এলো আমার সাইকেলের দিকে। ওটাকে তারা ড্রেন থেকে টেনে বের করে পরিষ্কার করে দিলো। আমি আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে বললাম টিউশন এর দিকে। আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিলো যে মেয়েটা আমার চলে যাওয়া দিকে তাকিয়ে আছে। আমি একবার ঘুরে তাকালাম পিছনের দিকে। কেমন যেনো একটা নেশাতুর হাসি ঠোঁটের কোণে লেগে আছে সেটা স্পট বুঝতে পারলাম!
............To be Continued!

মন্তব্যসমূহ