মানুষ নাকি সবুজ নিয়ে বাঁচে
“আরে বস এতো সেকশন 370, মাল গুলো তাহলে….. ছি মুখে আনানোও পাপ”, বললো হিমাংশু।
আমি ওর কোমরে কনুয়ের গুতো মেরে বললাম, “গাধা আমি যতদূর শুনেছি ওটা 370 না 377” বলেই হো হো করে হাসতে শুরু করলাম আমি, হিমাংশু, সত্য একসাথে।
| lesbian |
|---|
আজ 6 September 2018, হটাত করে মনে গেলো সেদিনের কথাগুলো। ক্লাস নাইন না বোধহয় টেন। কৈশোরের দুয়ারে পা দিয়েছি সবে, সবার মনে প্রেমের প্রথম ঘুন পোকা হানা দিয়েছে, দিয়েছিল ওদের মনেও কিন্তু ওরা ছিলো শান্ত। ছিলনা প্রকৃতি আর সমাজ ধ্বংস করার কোনো কারণ। অন্তত আজ পর্যন্ত খুঁজে পেলাম না।
তাহলে সমাজ আর পরিবার কেনো মানতে নারাজ? উত্তর আমার জানা নেই।
ওরা কারা নিশ্চই জানতে ইচ্ছে করছে। ওরা আর কেউ নয় ওরা মানুষ। ওহ, মানুষের নাম আছে, তাই না। আচ্ছা ধরুন লিলি, শ্রীপর্ণা। আবার বলবেন দুটোই মেয়ে কেনো, আমার উত্তর ওরা মানুষ। ওদের মান এবং হুস দুটোই আছে।literotica lesbian
অনেক হলো বাজে বকা আবার গল্পে ফিরি। লিলি আমাদের ক্লাসে এক পরিচিতি মুখ ছিল। বললে একদম ডাকাবুকো। তাই বোধহয় আজ সে IPS officer। আর শ্রীপর্ণা সে ছিল সবার মধ্যমনি। উঠতি বয়সের মৃগতৃষ্ণা। শ্রীপর্ণার চাহুনি আমার খুব ভালো লাগতো। সবাই শ্রীপর্ণাকে প্রস্তাব দিলেও কোনোদিন কাউকে সম্মতি দেইনি। হয়তো তখনও সে তার রাজকুমারকে খুঁজে পেয়েছিলনা। কিন্তু এখন মনে হলো রাজকুমরীকে।
সবই চলছিল, সময়ের তালে কিন্তু হটাত শুরু হলো, লিলি আর শ্রীপর্ণার বন্ধুত্ব।
স্কুলের ফিজিক্স স্যার প্রজেক্ট দিয়েছিলেন, এখন আর মনে নেই বিষয়টা কি ছিল, তো যাই হোক স্যার লিলি আর শ্রীপর্ণাকে প্রজেক্টের পার্টার করলেন। কিন্তু লিলি বেকে বসলো সে কিছুতেই শ্রীপর্ণাকে নিজের পার্টনার করবেনা। স্যার শেষে ধমক দিতে লিলি চুপ করে গেলো। তারপর দিন এগাতে লাগলো। আস্তে আস্তে ওদের বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হতে লাগলো। লিলি প্রায় সময় কেমন একভাবে চেয়ে থাকতো শ্রীপর্ণার দিকে আমরা সেটা লক্ষ্য বেশ হাসি ঠাট্টা করতাম, লিলি রেগে ওঠে গালিগালজ করতো। প্রথম প্রথম শ্রীপর্ণা ওর ওরকম তাকানোতে বিরক্ত হতো, পরে ওরকম থাকানোতে শ্রীপর্ণা মুচকি মুচকি হাসতে। তারপর থেকে শুরু হলো একসাথে বসা বেঞ্চে, সবসময় একে অপরের হাত ধরে চলা, টিফিন ভাগাভাগি করে খাওয়া আরো কত কি। স্যাররা ওদের মানিকজোড় বলতো, কিন্তু আমরা খিল্লি উড়াবার জন্য ওদের বরবউ বলে রাগাতাম, ওরা প্রথম প্রথম রেগে যেত, আস্তে আস্তে সেটাও কমে গেলো, পরে বরবউ বলে ওরা একে অপরের দিকে তাকাতো আর এক রহস্যময় হাসি দিত। এটা আমাদের বন্ধুমহলে অস্বাভাবিক লাগলেও পড়ার চাপ আর সময়ের গতিতে পুরনো হয়ে গিয়েছিল। কেউ কেউ ভাবলো হয় তো ভাবলো ওদের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে তাই পাত্তা দেইনা।lesbian romance novels
এরকম করে আরো সময় পেরোতে থাকলো, এরই মধ্যে অনেকে অনেক রকম খবর রটাতে লাগলো। আমাদের ক্লাসে সবার হাঁড়ির খবর রাখতো রতন সে একদিন চুপি চুপি এসে আমাদের বললো, সে নাকি লিলি আর শ্রীপর্ণাকে চুম খেতে দেখেছে তাও নাকি ঠোঁটে, সবাই হো হো করে হেঁসে উঠল, ব্যাটা নিশ্চই গাঁজায় দম মেরেছে, নাহলে এসব সম্ভব নাকি, লিলি কেনো শ্রীপর্ণার ঠোঁটে চুমু খাবে। ওরা তো দুজনেই মেয়ে এও আবার হয় নাকি। তারপর এক এক করে প্রায় সবাই দাবি করতে লাগলো হ্যাঁ দেখেছে লিলি শ্রীপর্ণাকে চুমু খেতে। কেউ আবার বললো, সে নাকি দেখেছে লিলি আর শ্রীপর্ণা স্কুলের ধারের পুকুরটাই বসেছিল। আর এরকম কানাঘুষো চলছিল বলে সেও ওই ওদের দেখে আড়াল হয়ে ওদের কীর্তি দেখছিল, তারপর সে দেখলো লিলি ওর একটা হাত শ্রীপর্ণার জামার বোতাম খুলে ওর ভিতরে হাত ঢুকিয়ে ওর বুবস টিপতে লাগলো। আর শ্রীপর্ণা লিলির কাঁধে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে মুখ নানা রকম আওয়াজ করতে লাগলো।lesbian love story
এরপর থেকে আমাদের মধ্যে ওদের নিয়ে এক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলো ওদের দেখলেই ঘেন্না লাগলো, আমার কেউ ওদের সাথে কথাও বলতাম না, নোংরা মনে হতো ওদের। ছি: দুটো মেয়ে হয়ে কিভাবে এসব করে।
তারপর সরস্বতী পূজার সময় ওরা এক কান্ড করে করে বসলো, সরস্বতী পুজোতে সবাই যে যার মতো আনন্দে মেতে রইলো, কিন্তু ওদের দুজন একবার দেখা দিয়েই যেনো আর খুঁজে পাওয়া গেলো না। আমরা ওদের দুজনকে খুঁজতে লাগলাম। সবদিক তন্ন তন্ন করে খুঁজে কোথাও পেলাম না শেষে আমরা ছাদের দিকে গেলাম সেখানে গিয়ে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ দেখি লিলি শ্রীপর্ণাকে ঠোঁটে কিস করছে আর শ্রীপর্ণার জামার প্রত্যেকটা বোতাম খোলা। তারপর গোটা স্কুল জানাজানি হলো। স্যাররা ওদের দুজনকে স্কুল থেকে বার করে দিবেন বলে ঠিক করলেন, কিন্তু শ্রীপর্ণার বাবা পয়সাওয়ালা লোক ছিলেন তাই সব দোষ লিলি ওপর চাপিয়ে দিলেন, বলা হলো লিলি মানসিক ভাবে অসুস্থ। কিন্তু লিলির বাবা স্যারদের হাতে পায়ে ধরলেন যাতে পরীক্ষায় বসতে পারে, শেষে তাই হলো লিলিকে স্কুল থেকে সাসপেন্ড করে হলো, সুযোগ দেওয়া হলো পরীক্ষায় বসার। তারপর আবার আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হতে লাগলো। এগিয়ে আসতে লাগলো মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষা এলো আর গেলো, কিন্তু রেজাল্টের সময় সবাই অবাক হলো, লিলি রাজ্য স্তরে অষ্টম হয়েছে। শেষে একদিন লিলি আর শ্রীপর্ণা নিজেদের অক্ষুণ্ন প্রেম বজায় রাখতে ঘর ছাড়া হলো, গ্রামে বেশ হল্লা হলো, কিন্তু ওদের দুজনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
টিভির রিপোর্টার অর্ণব গোস্বামী যখন চেঁচিয়ে বললো, “সমকামিতা কোনো রকম প্রকৃত বিরুদ্ধ নয়, না এটা মানসিক রোগ নয়, এটা সম্পূর্ণ প্রকিতির রূপ, আজ 6 September আজ থেকে সারা ভারতে সমকামিতা আর অপরাধ নয়, সত্যিই ভারত আবার দ্বিতীয় বার স্বাধীন হলো, জয় হিন্দ”, lesbian stories to read
আমি বাস্তবে ফিরে এলাম। আমি টিভি বন্ধ করে বেলকনিতে এসে দাঁড়ালো, বাইরের কালো আকাশটা দেখতে লাগলাম, মন বিষণ্ণ হয়ে এলো, ইস সেদিন আমরা কতটা ভুল ছিলাম। লিলি আর শ্রীপর্ণাকে আমরা কত ভুল ভেবেছিলাম, ওরা যে মানুষ ওরাও জানে ভালোবাসতে সেটা ভুলে গিয়ে ছিলাম। মনে মনে বললাম, “লিলি আর শ্রীপর্ণা তোমরা এখন যেখানেই থাকো আমাদের ক্ষমা করে দিয়ো আমরা তোমায় চিনতে অনেক দেরি করে ফেলেছি”। একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়লাম। দূরে কোথাও একটা গান বাজছে মন দিয়ে শুনলাম নচিকেতার গান –
মানুষ নাকি সবুজ নিয়ে বাঁচে/
যায় হারিয়ে সুরেলা সঙ্গীতে/
এখন দেখি সত্য অনেক কঠিন/
জোনাকি নয় মানুষ গেছে জিতে…………।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন