ক্রিং ক্রিং……..
মোবাইলের কর্কশ চিল্লানিতে ঘুম ভেংগে গেল, মোবাইল ফোনে সময় বলছে রাত 2 টা বেজে 8 মিনিট। কলার আইডিতে চোখ পরতেই ঘুম ছুটে গেলো।
হ্যালো….
“রিপোর্টিং টাইম 3.59 yesterday afternoon” এটুকু বলেই কলটা কাট হয়ে গেল। এটা অবশ্য আগে থেকেই
জানতাম।
না আর ঘুম নয় চললাম ব্যাগ গুছাতে। জরুরি তলব হতে পারে তাই জমা কাপড় কম নিলাম। সঙ্গে লোডেড লাইসেন্স পিস্তল আর
আই কার্ড। বাড়ি
থেকে বেরোনো সময় বাড়ির উঠানে রাখা যুলোন্ত তুলসী গাছটার টবে ডুপ্লিকেট চাবি রেখে ম্যাসেজ বক্সটা
খুলে টাইপ করলাম, “babe I am going going Delhi. It’s urgent” sent অপশনটা
টিপে রওনা হলাম এয়ারপর্ট দিকে…………
5 বছর আগে
“প্রিয়া, আমি ভেবেছিলাম তোমার 12 এর পর তোমায় ডক্টর করবো, আর তুমি আমাকে না বলে
NDA
exam দিয়েছো?”
বাবা আমার কাঁধে হাত রেখে ব্যার্থ বললেন।
হ্যা আমি প্রিয়দর্শিনী রায় বাবার একমাত্র কুকণ্যা। কুকন্যা বললাম তাতে আমাকে character less ভাববেন না। বাবার মতে মেয়ে
হবে সুশীল গান বাজনা শিখবে রান্না করবে কিন্তু আমি হলাম উল্টো, সব সময় ধেই ধেই করে নাচি, শার্ট আর জিন্স প্যান্ট পরি আবার শার্টের হাতা গুটিয়ে রাখি। একবার অনেক
পীড়াপীড়ি করে বাইক কিনি তারপর সেটা
নিয়ে রেসিং শুরু স্টান্টবাজি দেখানো। তবে চুলটা কোনোদিন কাটিনি তাই বাপের কুকন্যা। তিনি চেয়েছিলেন এক আর হলাম আরেক। এই
জন্য মা বাবাকে দোষারোপ আর বাবা মাকে আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি। তারপর ক্লাস 12 এ আরও ভালো ভাবে
নিজেকে ছিলাম। হটাত করে বুঝতে পারলাম ছেলেদের abs থেকে মেয়েদের কালো বিন্দি আর লম্বা চুল আমার মনে বেশি স্থান
পেলো। আমার একজন খুব ভালো বন্ধু ছিল নাম শিবসেনা তাকে সব খুলে বলতে সে ইন্টারনেট ঘেঁটে অনেক জ্ঞান জোগাড় করে বললো, “you are homosexual
Priya! Congratulations এবার থেকে
তুই আমি একসাথে মেয়ে খুঁজব, পার্টি দে”। আমাকে সেই দিন অবশ্য পার্টি দিতে হয়েছিল। বললামনা বেস্ট ফ্রেন্ড। চলটা হ্যায় বস।
ইচ্ছা ছিল ইন্ডিয়ান আর্মি তে যোগ দেয়ার
সেই লক্ষেই এগোচ্ছিলাম কিন্তু যখন শুনলাম ইন্ডিয়ান আর্মিতে homosexual not
allowed, তখন একটু মুষরে পড়লাম। তারপর ঠিক করলাম
আইডেন্টিটি লুকিয়ে অ্যাপ্লাই করবো। সেইমতো NDA exam দিলাম আর লেগেও গেলো কিন্তু বাবা একটু disappointed হলেও মায়ের চাপে হ্যাঁ দিকে মাথা দোলালেন। তারপর ট্রেনিং এর জন্য Delhi শিফট হতে
হলো। একমাস চললো জোরকদমে প্র্যাক্টিস আর ট্রেনিং। ঠিক একমাস পর শীতের মাঝামাঝি সময়ে ক্যাম্পিং চলাকালীন একজন ভদ্রলোক কালো কোর্ট আর ব্ল্যাক হ্যাট পরে আমাদের ক্যাম্পে এলেন, দেখে মনে হলো নিজের অস্তিত্ব
কাউকে যেনো জানান দিতে চায়না। আমাদের মেজর
জেনারেলকে নিয়ে আড়ালে নিয়ে গোপনে কিছু কথবার্তা চালালেন। মেজর সাহেব হটাৎ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর হাক দিলেন, “মেজর প্রিয়া come here”
আমি সোটান মেজর সাহেবের কাছে গিয়ে স্যালুট জানালাম।
মেজর সাহেব, “ইনি তোমার সঙ্গে কিছু কথা বলতে চান তুমি এনাকে ভিতরে নিয়ে যাও”।
আমি আগন্তুকের পিছু পিছু “চলুন sir” বলে তাবুতে ঢুকলাম। ব্যক্তিটিকে চেয়ারে বসতে বলে আমি
সামনে দাঁড়ালাম। আগন্তুক আমাকে আপাদমস্তক পরীক্ষা করে বললেন, “তোমাদের মতো মেয়েদের জায়গা এটা নয়, মিস প্রিয়া, ওহ্ প্রিয়দর্শিনী রায়”।
আমার রেগে দাত চেপে এলো বললাম, “কোথায় মনে হয় স্যার আমাদের জায়গা”।
পরের কথা শুনে আমার মাথা ঘুরিয়ে গেলো আর
মনে হলো আমার শরীরের প্রত্যেক টা লোমকূপ দাড়িয়ে গেছে।
তিনি ছোট্ট অথচ ভারিক্কি গলায় বললেন, “R&AW তে”
তিনি আমার
মুখের ভাব পরীক্ষা করার জন্য বোধহয় কিছুখন আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন, “আমি
চাই R&AW
তে join করো, তাছাড়া তুমি gay দুদিন পর তোমার আদর্শ মেজর তোমাকে degrade করবে সেটা নিশ্চই ভালো হবে না”
এটা শুনে আমি ঢোক গিলতে লাগলাম, মুখে কথা আসলোনা, তবুও জোর করে বললাম, “কিন্তু আপনি জানলেন কি ভাবে”
“আমরা যাকে বাছি তাদের সব কুণ্ডলী আমাদের হাতে থাকে, বুঝলে মেজর প্রিয়া! তোমার কাছে দুটো রাস্তা
যেকোনো একটা chose করো, নাম লুকিয়ে দেশ
প্রেম নাকি নামের জন্য ঘাড় ধাক্কা দিয়ে
ইন্ডিয়ান আর্মি থেকে বের হওয়া। চয়েজ ইস ইউর” বলে তিনি উঠে গেলেন বুটের শব্দ আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেলে লক্ষ্য করলাম টেবিলে একটা সাদা চিরকুট পড়ে আছে তাতে লেখা বিনোদ সুদ আর মোবাইল নম্বর।
চিরকুটটা তুলে মনে মনে বললাম, “RAW chief বিনোদ সুদ”
বর্তমান সময়
প্ল্যানে বসে বসে আমার R&AW under cover agent হবার ইতিহাস ভাবছিলাম। সেদিন অবশ্য প্রথম টাই বেছেছিলাম। তাইতো
আজ এই অবস্থা। মাথা ঝাকিয়ে ফোন বের করে নাফিসার ফটো বের করে দেখতে লাগলাম পার্কে ঘুরতে
যাওয়ার ছবিটা দেখছি।
বেচারি হয়তো ঘুমোচ্ছে এখন থাক পরে ফোন দেয়া যাবে।
Aeroplane Delhi তে 4 টা বাজতে 8 মিনিট বাকি থাকতে
পৌঁছে গেলো। চেকিং এ আমার ব্যাগ না চেক করেই পাস দেওয়া হলো এদের আগে থেকেই inform করা ছিল। আমি ওয়াসরুমে গিয়ে
পিস্তল টা কোমরে গুঁজে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এলাম। পার্কিং প্লটে আগে থেকেই একটা
ব্ল্যাক মার্সিডিজ পার্ক করা ছিল, ওটাই করে Delhi এর unnamed
building এ চলে এলাম।
ভিতরে ঢুকতেই একজন বললো, “ইউ আর ফাস্ট এজেন্ট”
আমি হাসি দিয়ে চিফের কেবিনে গেলাম। Chief বোর্ডে পাকিস্থানের ম্যাপে point করছে।
“welcome back Agent, Take your sit” বললেন বিনোদ সুদ।
আমি পিস্তলটা টেবিলের ওপর রেখে পায়ের ওপর
পা তুলে চেয়ারে বসলাম।
Chief আমার দিকে
ঘুরে টেবিলে দুহাত ভর দিয়ে ঝুঁকে বললে, “ইউর নেক্সট মিশন ইস পাকিস্তান”
আমি বললাম, “স্যার details বলুন”
Chief শুরু করল, “আমাদের
এখানে বিশেষ করে জন্মু তে অনেক পাকিস্থানের স্লিপার সেল এক্টিভ আছে, এতে
অনেক মিস লিডিং হচ্ছে ইন্ডিয়ান আর্মি, আমি চাইছি একটা মোল ISI তে প্লান্ট করতে যাতে পাকিস্তানের ভিতরের খবর আগে R&AW পাক”
আমি বললাম, “স্যার it’s dengerous”
“ভয় পাচ্ছ”, বললেন chief
আমি দৃঢ়
গলায় উত্তর দিলাম, “no স্যার!”
Chief মুচকি হেসে বললো আমি জানি
“রেডী হও পাকিস্তান
যাওয়ার জন্য, ওখানে এজেন্ট 59 বলে দেবে করতে হবে”
“I am ready sir”
“হ্যা আর একটা কথা এটা পাকিস্তান ওখানে কিন্তু homosexual relationships are still
illegal, একটু সাবধানে কাজ করবে, পাসপোর্ট কাল পেয়ে যাবে”
Ok sir বলে আমি
উঠে দরজার দিকে পা বাড়ালাম, হাতলে হাত দিয়ে টানতেই chief বললো, “আচ্ছা নাফিসা জানে তুমি কি কাজ করো”
আমি শুষ্ক হাসি মুখে এনে বললাম, “না ও জানে ও শুধু জানে আমি ওকে প্রচুর ভালোবাসি নিজের জীবনের থেকে বেশি, চিন্তা নেই ও কোনোদিন আমার কাজের
মধ্যে আসবে না, চলি sir!”
চলে আসার
সময় শুনতে পেলাম chief বলছেন, “that’s why I call you the Black Panther, Jai Hind!”
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন